বুকের ভেতরটা কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো একটি দৃশ্য! বাবা-মায়ের সাথে পাহাড়ি ঝর্ণার সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছিলো ছোট্ট একটি শিশু। কে জানতো, প্রকৃতির সেই অপরূপ রূপই মুহূর্তের মধ্যে এক ভয়ংকর মৃত্যু ফাঁদ হয়ে উঠবে!
হঠাৎ করেই ঝর্ণার তীব্র স্রোত অবুঝ শশুটিকে ভাসিয়ে নিয়ে আটকে ফেলে দুটি পাহাড়ের দুর্গম খাঁজে। একপাশে উত্তাল পানির স্রোত, অন্যপাশে পাথরের কঠিন দেয়াল—মাঝখানে অসহায় শিশুটির বাঁচার জন্য আর্তচিৎকার! বাবা-মায়ের পৃথিবী যেন সেই মুহূর্তে থমকে গিয়েছিল।
যখন প্রায় সমস্ত আশা শেষ, ঠিক তখনই সেখানে ঘটে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। উপস্থিত পর্যটকরা আর দর্শক হয়ে থাকতে পারলেন না। জেগে উঠলো তাদের ভেতরের মানবতা!
কয়েকজন সাহসী মানুষ নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একে অপরের হাত ধরে শক্ত করে দাঁড়িয়ে গেলেন পানির স্রোতের সামনে। তারা শরীর দিয়ে তৈরি করলেন এক “মানবিক দেয়াল”, যাতে ঝর্ণার ভয়ংকর স্রোত কিছুটা বাধা পায় এবং শিশুটি ভেসে না যায়। একদিকে তীব্র স্রোতের চাপ, অন্যদিকে পাথরের খাঁজে আটকে থাকা শিশুটির কান্না ,সব মিলিয়ে এক রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি!
অনেকক্ষণ চেষ্টার পর, অসীম সাহসিকতা আর বুদ্ধিমত্তার জোরে তারা সফল হন। কৌশলে ছোট্ট শিশুটিকে সেই ভয়ংকর ফাঁদ থেকে উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনাটি শুধু একটি উদ্ধারকাজ নয়, এটি এক চরম সংকটে মানুষের একতার নিদর্শন। প্রমাণ করে, ধর্ম-বর্ণ-পরিচয় নির্বিশেষে বিপদের মুহূর্তে অপরিচিত মানুষগুলোই হয়ে ওঠে একে অপরের সবচেয়ে বড় আশ্রয়।
মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা রাখছি যে সকল মহৎ প্রাণ মানুষগুলো দুর্ঘটনায় নিপতিত নাবালক শিশুটিকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনে শুধু বাবা- মায়ের মুখে হাসি ফোটায়নি।তারা আমাদের হৃদয়ের চক্ষু ফুটিয়ে দিয়েছে। শিশুটি নিরাপদে তার বাবা-মায়ের কোলে ফিরে গেছে।এটাই আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা। আমাদের হাজার বছরের সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির এক নিগূঢ় মেলবন্ধন।যা মানবিক দায়বদ্ধতাকে আরো বাড়িয়ে দেয়।স্যালুট সেই সকল প্রকৃত নায়ককে, যারা প্রমাণ করলেন—মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য।