সসপঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) বা ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ ও বিতরণে অনিয়ম এবং ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বাদ দিয়ে পছন্দের লোকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কার্ড বিতরণের অভিযোগ করেছেন একই ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের (১, ২ ও ৩) ইউপি সদস্য লাভলী আক্তার।
তিনি বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ইউনিয়নের ২৭৫টি ভিজিডি কার্ড বরাদ্দে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে নিরপেক্ষ ও সঠিকভাবে বিতরণের নির্দেশনা থাকলেও, ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তইবুর রহমান এবং ইউপি সদস্য মামুনুর রশিদ জুয়েল নিজেদের মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্যে কার্ড বিতরণ করছেন।
লাভলী আক্তার অভিযোগ করেন, তিনি তার ওয়ার্ডের দুই অসহায় নারীর জন্য সুপারিশ করতে গেলে মামুনুর রশিদ জুয়েল তাকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। নিরুপায় হয়ে তিনি অর্থ প্রদান করেন এবং তাকে দুটি কার্ড দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। তাছাড়া অন্যান্যদের কাছ থেকেও টাকা ও চাল নিয়ে কার্ড দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় ভ্যানচালক আয়নাল হক বলেন, ভিজিডি কার্ডের জন্য জুয়েল মেম্বারকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি। মহিলা মেম্বারদের সামনেই আমি টাকা দেই।
আরও এক ভুক্তভোগী ফাতেমা বলেন, মেম্বার আমার কাছ থেকে তিন হাজার টাকা ও এক বস্তা চাল নিয়েছেন। পরবর্তীতে পাঁচ বস্তা চাল আসলে সেখান থেকেও এক বস্তা রেখে দেন। পরে সবার সামনে অভিযোগ করলে সেটা ফেরত দেন।
স্থানীয় কৃষি শ্রমিক মহব্বত আলী বলেন, আমরা গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই। টাকা না দিলে কার্ড পাওয়া যায় না। যারা টাকা দেয় তারাই পায়।
স্থানীয় বাসিন্দা বীরেন ও বিধবা রহিমা বেগম বলেন, প্রকৃত অসহায় হয়েও তারা টাকা না দিতে পারায় কার্ড পাননি।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য মামুনুর রশিদ জুয়েল বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে আমি পরিষদে যেতে না পারি।
তবে ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান তইবুর রহমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার নজির বলেন, একজন সংরক্ষিত ইউপি সদস্য আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্তের জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।