রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হিন্দু বসতিতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচজন আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেলে গঙ্গাচড়া আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ কমল রায় এই আদেশ দেন।
গ্রেপ্তার পাঁচ আসামি হলেন ইয়াছিন আলী (২৫), সিংগেরগাড়ি মাঝাপাড়া, স্বাধীন মিয়া (২৮), মাগুড়া শ্রীপাড়া, আশরাফুল ইসলাম (২৮), দক্ষিণ চাঁদখানা মায়াপাড়া, এস এম আতিকুর রহমান খান আতিক (২৮), উত্তর সিংগেরগাড়ি পাঠানপাড়া এবং সাদ্দাম হোসেন সেলিম (২২), দক্ষিণ সিংগেরগাড়ি চওড়াপাড়া, সকলেই নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।
এর আগে বুধবার (৩০ জুলাই) গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি আল এমরান আদালতে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানিকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রিমান্ডের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী পলাশ কান্তি নাগ বলেন, “আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার পেছনের পরিকল্পনাকারী ও নেতৃত্বদানকারীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।” শুনানি শেষে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ছয়আনি গ্রামের সুজন চন্দ্রের ছেলে রঞ্জন রায়ের নামে পরিচালিত একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র ও অশালীন মন্তব্য পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে। বিষয়টি ভাইরাল হলে এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
২৬ জুলাই রঞ্জন রায়কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরদিন, ২৭ জুলাই, কিশোরগঞ্জের সিংগেরগাড়ি থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল ছয়আনি গ্রামে আসে। সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৩টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মাঠে নামলে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়।
২৯ জুলাই রাতে এক ভুক্তভোগী রবীন্দ্রনাথ রায় বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১,২০০ জনকে আসামি করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের রিমান্ডে এনে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য দোষীদের শনাক্তে অভিযান জোরদার করা হবে। হিন্দুপল্লীতে সংঘটিত সহিংসতার বিচার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।