ঢাকা ০১:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ:
নেপথ্যে ১০ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য: প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে হাইকোর্টের আপীল বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করে ৫৪ জন কর্মচারি নিয়োগ, আরো প্রায় ৬০০জনের নিয়োগ চুড়ান্ত!  রাজৈরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন কৃষক দল ও পূজা উদযাপন ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ। ফরিদপুরের ট্রাক চাপায় এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।  মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন তোফায়েল আহমেদ। জরুরি ভর্তি করা হল হাসপাতালে। বহু বছর সেনাবাহিনীর থাবায় মুখোশ উন্মোচন হলো মাদক ব্যবসায়ী কাশেম ওরফে ফেন্সি কাসেমের। শেরপুরে দলিত নারীদের মুষ্টির চালে “দুর্গা পূজা”। “গীতার আলো ঘরে ঘরে জ্বালো” এ শ্লোগানে মুখরিত মাদারীপুর। মনের মাধুরী মিশিয়ে সাজাচ্ছে দেবী দুর্গাকে।মন্ডপে মন্ডপে চলছে মা’কে বরণের প্রস্তুতি। এক রাতের রক্তগাথা: শাপলা চত্বরে নৃশংসতার ১২ বছর। বিসিআইসি: খাদ্য নিরাপত্তা ও শিল্পায়নের অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে চলছে মহালুটপাট !  ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড.আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে দুদকে অন্তহীন দুর্নীতির অভিযোগ! 

  • সারাক্ষণ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:০২:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩৯ জন সংবাদটি পড়েছেন

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. মো: আবু সুফিয়ান এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে ১২ দফা দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। এই অভিযোগপত্রে বলা হয় যে, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. মো: আবু সুফিয়ান একজন মহাদুর্নীতিবাজ কর্মকতা। তিনি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মুজিব কর্ণার নির্মাণের প্রথম উদোক্তা এবং বিগত ৪ঠা আগস্ট কথিত শান্তি সমাবেশের নেতৃত্বদানকারী। ড. মো: আবু সুফিয়ান বিগত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের ১৭ বছরে বিশেষ সুবিধাভোগী। বিগত ১৭ বছরে তিনি অধিদপ্তরের বিভিন্ন লাভজনক পদে দায়িত্ব পালন করে প্রায় শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। ড. সুফিয়ান আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা মো: হানিফের নিকটতম আত্মীয় হওয়ার সুবাধে এ সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছেন।

ড.আবু সুফিয়ান ৫ই আগষ্টের পটপরিবর্তনের পর পরই পুরোপুরি জামাতপন্থী বনে যান এবং প্রভাব খাটিয়ে সিনিয়রকে বাদ দিয়ে নিজেই অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের পদটি বাগিয়ে নেন। এ ক্ষেত্রে তিনি ২ জন সমন্বয়ককে ৫ কোটি টাকা দিয়েছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এখন তিনি ঐ সমন্বয়কদের ব্যবহার করে ভারমুক্ত হওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিম্নে তার কয়েকটি দূর্নীতির তথ্য উপস্থাপন করা হলো:

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে সারা দেশে ক্ষুদ্র খামারী ও দরিদ্র কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরবরাহের জন্য পরিচালক ঔষধাগারের মাধ্যমে বাৎসরিক ঔষধ পত্র ক্রয় করা হয়ে থাকে। সে অনুযায়ী পরিচালক ঔষধাগার প্রায় ২১ কোটি টাকার মেডিসিন/যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য মোট ৩১টি প্যাকেজে দরপত্র আহব্বান করে। প্রাপ্ত দরপত্র সমূহ মূল্যায়ন করে দরপত্র কমিটির সুপারিশের পর দরপত্র অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট হতে অনুমোদন নিয়ে পরিচালক সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠান সমূহের বরাবরে নোয়া প্রদান করেন। নোয়া প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সমূহ নোয়ার শর্তানুযায়ী ১০% সিকিউরিটি জমা দিয়ে চুক্তিপত্র দাখিল করে। এ সকল প্রক্রিয়া পূর্বতন মহাপরিচালকের আমলে সমপাদিত হওয়ায় কোন ঠিকাদার ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. আবু সুফিয়ানের সংগে কোন প্রকার যোগাযোগ করেন নি। ড. আবু সুফিয়ান ২/৩ জন ঠিকাদারকে তার সাথে দেখা করার জন্য খবর পাঠালেও তারা দেখা করেনি। যার ফলশ্রুতিতে তিনি মন্ত্রণালয়ের রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব (ছাত্রলীগের সাবেক ক্যাডার) এর সাথে আলাপ করে একটি বেনামী অভিযোগ দাখিল করিয়ে কোন প্রকার কারন দর্শানো ছাড়াই সীমিত সংখ্যাক দরপত্র জমার অভিযোগে মেডিসিনের ক্রয়ের সকল দরপত্র বাতিল করে পরিচালক বরাবরে চিঠি দেন। নিয়ম অনুযায়ী দরপত্র আহব্বানকারীই দরপত্র বাতিল করার ক্ষমতা রাখেন অন্য কেউ নয়। বিভাগীয় প্রধান হিসাবে ডিজি পরিচালককে নির্দেশনা দিতে পারেন তবে বাতিল করতে পারেন না। মহাপরিচালকের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ঠিকাদাররা তাদের আপত্তি জানিয়ে এবং সুবিচারের জন্য ডিজি,সচিব ও উপদেষ্টা বরাবরে আবেদন করলেও কোন প্রতিকার পায়নি। ফলে দূর্বার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল উচ্চ আদালতে রীট দাখিল করে আইনজীবির মাধ্যমে বিষয়টি ডিজিকে অবহিত করেন। কিন্তু ডিজি কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে পুনরায় দরপত্র আহব্বানের নির্দেশনা দেন এবং পুনরায় দরপত্র আহব্বান করান। ইতোমধ্যে উচ্চ আদালত ডিজির কার্য্যক্রমকে কেন অবৈধ ঘোষনা করা হবে না তার জন্য ৪ সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে রুল জারী করেন এবং যাবতীয় কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন। কিন্তু ডিজি কার্য্যক্রম বন্ধ না রেখে পরবর্তী দরপত্রের কার্য্যক্রম চালিয়ে যান ও একমি নামের একটি কোম্পানীর নিম্নমানের ঔষধ ও সুপার পাওয়ার নামক একটি প্রতিষ্ঠানের ঔষধ সরবরাহের কার্যাদেশ প্রদান করার অনুমোদন দেন। কথিত আছে ডিজি ড. মো: আবু সুফিয়ান সেখান হতে ২ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। উল্লেখ্য যে একমি কোম্পানীর লিটারেচারের সাথে বাস্তবের ঔষধের কোন মিল নেই এবং খুব নিম্নমানের। যা যে কোন প্রতিষ্ঠিতি ল্যাব হতে নমুনা পরীক্ষা করালে (প্রাণিসম্পদ বাদ দিয়ে) প্রমানিত হবে।

এ বিষয়ে একাধিক প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। এমনকি একটা তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি।

পিপিআর রোগ নিমূল ও এফএমডি প্রতিরোধ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ১০০ কোটি টাকার এফএমডি ভ্যাকসিন ক্রয়ের দরপত্রে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। ১ম বার ১০০ কোটি টাকার ভ্যাকসিন ক্রয়ে বাহাউদ্দীন নাসিম গ্রুপের নির্দেশনা অনুযায়ী এমনভাবে স্পেসিফিকেশন করা হয় যেখানে মাত্র ১টি দেশের উৎপাদিত ভ্যাকসিন সরবরাহ করা যাবে। এবং ঔ দরপত্রে মাত্র ১টি প্রতিষ্ঠান ওয়ান ফার্মার (রাশিয়ান ভ্যকসিনের জন্য) দরপত্রটি রেসপনসিভ করা হয় এবং তাকেই শতকোটি টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। বাস্তবে ঔ ভ্যাকসিনের মূল্য ছিল ৪০ কোটি টাকা। বাকী ৬০ কোটি টাকা আওয়ামী লীগের নাসিম গ্রুপ, তৎকালীন পিডি ও ডিজি ভাগাভাগি করে নেন।

আলোচ্য দরপত্রের ক্ষেত্রেও একই পন্থা অবলম্বন করতে চেয়েছিলেন আর সে জন্য ১ম দরপত্রে তাদের ঠিকাদার কাগজপত্রাদি প্রস্তুত করতে পারেনি বলে রি-টেন্ডার করা হয়। দ্বিতীয় দরপত্রের সময় নাসিমগ্রুপের সুবিধামত স্পেসিফিকেশন দিতে না পারায় (বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখির কারনে) ৭টি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ গ্রহন করে। এখানে নাসিম গ্রুপের সমার্থিত টেকনো ড্রাগ ৫ম হওয়ায় এবং স¦মন্বয়ক তাবাসুমের সমার্থিত আরেকটি প্রতিষ্ঠান ওএমসি নামক প্রতিষ্ঠান ৪র্থ হওয়ায় সুবিধা করতে না পারায় এবং ওএমসির কাগজ পত্রাদি যথাযথ না থাকায় পুনরায় দরপত্র আহব্বানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উল্লেখ্য যে, ২য় দরপত্রে ৪টি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে যায়। তারা হল যথাক্রমে (ক) জেনটেক ইন্টারন্যাশনাল-৭৯,১২,৯৯,৯৮৪) টাকা। ((খ)ওএমসি-৮২,৫০,১৪,২৬৯.২১৪ টাকা, (গ)টেকনো ড্রাগ-৮৪,৬৪,৪২,৮৪০/ টাকা এবং (ঘ) রেনেটা লি:- ১৭,১৪,৪২,৮৩৭/ টাকা দর প্রদান করে। ৩য় দরপত্রে ওএমসি টেকনো ড্রাগের সাথে সমঝোতায় যায় যে, টেকনো ড্রাগ দরপত্র দাখিল করবে না । এ শর্তে তাদের কিছু আর্থিক সুবিধা দিবে। যা এমডি জালাল আহমেদ নিজ মুখে স্বীকার করেছিলেন। ৩য় দরপত্রে ওএমসির দরপত্র যাতে বৈধ হয় সে জন্য পিডি তাদের পক্ষে কিছু শর্ত শিথিল করে দেয়। সে অনুযায়ী ৩য় দরপত্রে মাত্র ৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ গ্রহন করে। এখানে ৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে (১) মেসাস জেনটেক ইন্টার ন্যাশনাল ১ম নিম্ন দরদাতা হিসাবে বিবেচিত হয় এবং তার প্রদত্ত দর-৭৬,৩৫,৮৫,৬৯৯/ টাকা যা পূর্বে প্রদত্ত দর অপেক্ষা ২,৭৭,১৪,২৮৫ টাকা কম। (খ) ওএমসি-৯৬,৯৭,২৮,৫৫২/ টাকা যা তাদের পূর্বের দর অপেক্ষা ১৪,৪৭,১৪,২৮৩/ টাকা বেশী। আর ৩য় নিম্ন দরদাতা রেনেটা লি: ৯৭,১৪,৪২,৮৩৭/- যা পূর্বে প্রদত্ত দরের সমান। এখানে লক্ষ্যনীয় ওএমসি সমন্বয়ক তাবাসুম, বর্তমান ডিজি এবং পিডির সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় পূর্বে প্রদত্ত দর অপেক্ষা ১৪,৪৭,৪২,৮৩৭ টাকা বেশী প্রদান করেছে যা মেকিং গেম ছাড়া সচরাচার ঘটে না।

এতকিছুর পরেও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ডিজি ড. মো: আবু সুফিয়ান তার নিয়ন্ত্রিত কমিটি দ্বারা নিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত দর ৭৬,৩৫,৮৫,৬৯৯/ টাকার দরপত্রটি যুক্তি সংগত কোন কারন ছাড়াই মিথ্যা তথ্য দিয়ে নন রেসপনসিভ করিয়ে ২০,৬১,৪২,৮৫৩/ টাকা বেশী সুপারিশ করিয়ে ওএমসিকে ৯৬,৯৭,২৮,৫৫২/ টাকায় কার্যাদেশ প্রদানের জন্য সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠান এবং উপদেষ্টাকে দিয়ে নথি অনুমোদন করিয়েছেন। এখানে ওএমসি প্রায় ২০ কোটি টাকা লেনদেন করবে বলে চুক্তিবদ্ধ এবং প্রায় ১০ কোটি টাকা লেনদেন করেছে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়।

 

ভারপ্রাপ্ত ডিজি ড. আবু সুফিয়ান অধিদপ্তরের গ্যারেজ মেরামত/রং করার নাম করে দরপত্র আহব্বান করে ২৫ লক্ষ টাকার কার্যাদেশ প্রদান করেন। কিন্তু বাস্তবে গ্যারেজের কোন কাজ না করে ভবনের ৫ম তলায় কর্মকর্তা/কর্মচারীদের চা-সিগারেট খাওয়ার জন্য সর্বমোট ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২টা রুম তৈরী করেছেন। বাকী টাকা ডিজি/এডি জিল্লুর ও ঠিকাদার ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। যা বাস্তবে তদন্ত করলে প্রমাণিত হবে। একইভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাওয়ানোর জন্য ৪০ লক্ষ টাকার কার্যাদেশ দিয়েছেন এবং সেখান হতে প্রতিদিন ডিজি/পরিচালক প্রশাসন/বাজেট, এডি জিল্লুর দুপুরে খানা খান এবং রাতের খাবার বাসায় নিয়ে যান। গত বছরেও ৩৫ লক্ষ টাকা খরচ করে ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুনের জন্য বিগত বছরের টাকা হতে বর্তমান ডিজি ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং এ বছর ৩০ লক্ষ টাকার অনুমোদন দিয়েছেন। বাস্তবে ২ লক্ষ টাকাও খরচ করেন না। এছাড়াও বিভিন্ন খাতে প্রায় ১ কোটি টাকার অপ্রয়োজনীয় টেন্ডার করে সমূদয় টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

ভারপ্রাপ্ত ডিজি মূলত: একজন পরিচালক। আর একজন পরিচালক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমোদিত অগ্রানোগ্রাম অনুযায়ী সার্বক্ষনিক প্রাধিকার প্রাপ্ত নয়। কিন্তু বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মহা পরিচালক ড. মো: আবু সুফিয়ান ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাসায় সার্বক্ষনিক একটি এসিযুক্ত পাজেরো জীপ এবং নিজেও অফিসে একখানা এসিযুক্ত প্যারোডো জীপ ব্যবহার করছেন।

ড. সুফিয়ান কোন প্রকার নিয়ম নীতি ছাড়াই ৯ম ও ৬ষ্ঠ গ্রেডের কর্মকতাদের নিজে ইচ্ছামত আর্থিক সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে (জনপ্রতি-২-৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে) অহরহ বদলী করে যাচ্ছেন। যা তার সময়ে পরিসংখ্যন নিলেই প্রমানিত হবে।

ড. সুফিয়ান অধিদপ্তরের খামার শাখার দায়িত্বে থাকাকালীন হাজার হাজার টন পশুখাদ্য আমদানীর জন্য এনওসি ইস্যু করেছেন। বিনিময়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তিনি একজনের নামে ১০ হাজার টনের এনওসি দিয়ে (যা রেজিষ্টারে এন্টি থাকে) ডুপ্লিকেট আরোও ৩/৪টি একই নম্বরে এনওসি দিয়েছেন। যা তার সময়ে ইস্যুকৃত এনওসি পরীক্ষা করলে প্রমানিত হবে। তিনি বিগত সরকারের সময় আউট সোর্সিং এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রতি ২/৩ লক্ষ টাকা নিয়েছেন।

ড. সুফিয়ান একজন স্বঘোষিত ঘুসখোর ও দূর্নীতিবাজ হিসাবে সকলের নিকট পরিচিত। তিনি ঘুষের টাকায় বনানী ডিওএইচএসএ ৩২০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট কিনেছেন। সাভারে প্রায় ২ বিঘা জমি কিনেছেন। দেশের বাড়ীতে কোটি টাকা ব্যয়ে বাড়ী নির্মাণ করা সহ প্রায় ৫০ বিঘা ধানের জমি ক্রয় করেছেন। এছাড়া এফডিআর, সঞ্চয়পত্র তো রয়েছেই। যা একজন সরকারি চাকুরীজীবির আয়ের সাথে সংগতিপুর্ণ নয় । তার ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব নিলেই বিষয়টি প্রমানিত হবে।

ভারপ্রাপ্ত ডিজি ড. সুফিয়ান সর্বশেষ দুর্নীতি করেছেন বিগত রোজার পূর্বে। মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে দিয়ে কথিত ন্যয্য মূল্যে দরিদ্র মানুষের মাঝে মাংস, দুধ, ডিম, মুরগী বিক্রি উদ্বোধনের নামে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এবং ৪ হাজার টাকার গাড়ী ১১ হাজার টাকায় ভাড়া দেখিয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যা বিশদভাবে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য যে, সাভার ডেইরী ফার্মে দুধ ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও রোজার মাসে কথিত ভূর্তুকী মূল্য ৮০ টাকা দরে বিক্রি করে সেখান থেকে এবং সরকারী খামার ওহতে গরুর প্রদান করে ৬৫০/ টাকা কেজি মূল্যে মাংস বিক্রি দেখিয়ে প্রায় কোটি টাকা আদায় করেছেন এই ডিজি ড. আবু সুফিয়ান। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে একজন সাংবাদিক রীট মামলা দায়ের করেছেন। ড. মো: আবু সুফিয়ান বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগি দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদেরকে তার সহযোগী হিসাবে পদায়ন করেছেন,এখনো করছেন।

তিনি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে আর কিছুদিন ডিজির দায়িত্বে থাকলে এই অধিদপ্তরটি দুর্নীতির সাগরে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করা হয়েছে।

অভিযোগকারী এসব অনিয়ম দুর্নীতি তদন্ত করার জন্য দুদক চেয়ারম্যানের পদক্ষেপ কামনা করেছেন। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য অভিযোগের অনুলিপি প্রধান উপদেষ্টা ও মন্ত্রী পরিষদ সচিবকেও প্রদান করা হয়েছে।

সারাক্ষণ বার্তার প্রতিনিধি এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড.আবু সুফিয়ান বলেন, আমি কোন দুর্নীতি করি না।

Tag :
About Author Information

GOURANGA BOSE

জনপ্রিয় সংবাদ

নেপথ্যে ১০ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য: প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে হাইকোর্টের আপীল বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করে ৫৪ জন কর্মচারি নিয়োগ, আরো প্রায় ৬০০জনের নিয়োগ চুড়ান্ত! 

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে চলছে মহালুটপাট !  ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড.আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে দুদকে অন্তহীন দুর্নীতির অভিযোগ! 

আপডেট সময় : ১১:০২:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. মো: আবু সুফিয়ান এর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে ১২ দফা দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। এই অভিযোগপত্রে বলা হয় যে, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. মো: আবু সুফিয়ান একজন মহাদুর্নীতিবাজ কর্মকতা। তিনি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মুজিব কর্ণার নির্মাণের প্রথম উদোক্তা এবং বিগত ৪ঠা আগস্ট কথিত শান্তি সমাবেশের নেতৃত্বদানকারী। ড. মো: আবু সুফিয়ান বিগত স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের ১৭ বছরে বিশেষ সুবিধাভোগী। বিগত ১৭ বছরে তিনি অধিদপ্তরের বিভিন্ন লাভজনক পদে দায়িত্ব পালন করে প্রায় শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। ড. সুফিয়ান আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা মো: হানিফের নিকটতম আত্মীয় হওয়ার সুবাধে এ সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছেন।

ড.আবু সুফিয়ান ৫ই আগষ্টের পটপরিবর্তনের পর পরই পুরোপুরি জামাতপন্থী বনে যান এবং প্রভাব খাটিয়ে সিনিয়রকে বাদ দিয়ে নিজেই অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালকের পদটি বাগিয়ে নেন। এ ক্ষেত্রে তিনি ২ জন সমন্বয়ককে ৫ কোটি টাকা দিয়েছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এখন তিনি ঐ সমন্বয়কদের ব্যবহার করে ভারমুক্ত হওয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিম্নে তার কয়েকটি দূর্নীতির তথ্য উপস্থাপন করা হলো:

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে সারা দেশে ক্ষুদ্র খামারী ও দরিদ্র কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরবরাহের জন্য পরিচালক ঔষধাগারের মাধ্যমে বাৎসরিক ঔষধ পত্র ক্রয় করা হয়ে থাকে। সে অনুযায়ী পরিচালক ঔষধাগার প্রায় ২১ কোটি টাকার মেডিসিন/যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য মোট ৩১টি প্যাকেজে দরপত্র আহব্বান করে। প্রাপ্ত দরপত্র সমূহ মূল্যায়ন করে দরপত্র কমিটির সুপারিশের পর দরপত্র অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট হতে অনুমোদন নিয়ে পরিচালক সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠান সমূহের বরাবরে নোয়া প্রদান করেন। নোয়া প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সমূহ নোয়ার শর্তানুযায়ী ১০% সিকিউরিটি জমা দিয়ে চুক্তিপত্র দাখিল করে। এ সকল প্রক্রিয়া পূর্বতন মহাপরিচালকের আমলে সমপাদিত হওয়ায় কোন ঠিকাদার ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. আবু সুফিয়ানের সংগে কোন প্রকার যোগাযোগ করেন নি। ড. আবু সুফিয়ান ২/৩ জন ঠিকাদারকে তার সাথে দেখা করার জন্য খবর পাঠালেও তারা দেখা করেনি। যার ফলশ্রুতিতে তিনি মন্ত্রণালয়ের রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব (ছাত্রলীগের সাবেক ক্যাডার) এর সাথে আলাপ করে একটি বেনামী অভিযোগ দাখিল করিয়ে কোন প্রকার কারন দর্শানো ছাড়াই সীমিত সংখ্যাক দরপত্র জমার অভিযোগে মেডিসিনের ক্রয়ের সকল দরপত্র বাতিল করে পরিচালক বরাবরে চিঠি দেন। নিয়ম অনুযায়ী দরপত্র আহব্বানকারীই দরপত্র বাতিল করার ক্ষমতা রাখেন অন্য কেউ নয়। বিভাগীয় প্রধান হিসাবে ডিজি পরিচালককে নির্দেশনা দিতে পারেন তবে বাতিল করতে পারেন না। মহাপরিচালকের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ঠিকাদাররা তাদের আপত্তি জানিয়ে এবং সুবিচারের জন্য ডিজি,সচিব ও উপদেষ্টা বরাবরে আবেদন করলেও কোন প্রতিকার পায়নি। ফলে দূর্বার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল উচ্চ আদালতে রীট দাখিল করে আইনজীবির মাধ্যমে বিষয়টি ডিজিকে অবহিত করেন। কিন্তু ডিজি কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে পুনরায় দরপত্র আহব্বানের নির্দেশনা দেন এবং পুনরায় দরপত্র আহব্বান করান। ইতোমধ্যে উচ্চ আদালত ডিজির কার্য্যক্রমকে কেন অবৈধ ঘোষনা করা হবে না তার জন্য ৪ সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে রুল জারী করেন এবং যাবতীয় কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন। কিন্তু ডিজি কার্য্যক্রম বন্ধ না রেখে পরবর্তী দরপত্রের কার্য্যক্রম চালিয়ে যান ও একমি নামের একটি কোম্পানীর নিম্নমানের ঔষধ ও সুপার পাওয়ার নামক একটি প্রতিষ্ঠানের ঔষধ সরবরাহের কার্যাদেশ প্রদান করার অনুমোদন দেন। কথিত আছে ডিজি ড. মো: আবু সুফিয়ান সেখান হতে ২ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। উল্লেখ্য যে একমি কোম্পানীর লিটারেচারের সাথে বাস্তবের ঔষধের কোন মিল নেই এবং খুব নিম্নমানের। যা যে কোন প্রতিষ্ঠিতি ল্যাব হতে নমুনা পরীক্ষা করালে (প্রাণিসম্পদ বাদ দিয়ে) প্রমানিত হবে।

এ বিষয়ে একাধিক প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। এমনকি একটা তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি।

পিপিআর রোগ নিমূল ও এফএমডি প্রতিরোধ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ১০০ কোটি টাকার এফএমডি ভ্যাকসিন ক্রয়ের দরপত্রে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। ১ম বার ১০০ কোটি টাকার ভ্যাকসিন ক্রয়ে বাহাউদ্দীন নাসিম গ্রুপের নির্দেশনা অনুযায়ী এমনভাবে স্পেসিফিকেশন করা হয় যেখানে মাত্র ১টি দেশের উৎপাদিত ভ্যাকসিন সরবরাহ করা যাবে। এবং ঔ দরপত্রে মাত্র ১টি প্রতিষ্ঠান ওয়ান ফার্মার (রাশিয়ান ভ্যকসিনের জন্য) দরপত্রটি রেসপনসিভ করা হয় এবং তাকেই শতকোটি টাকার কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। বাস্তবে ঔ ভ্যাকসিনের মূল্য ছিল ৪০ কোটি টাকা। বাকী ৬০ কোটি টাকা আওয়ামী লীগের নাসিম গ্রুপ, তৎকালীন পিডি ও ডিজি ভাগাভাগি করে নেন।

আলোচ্য দরপত্রের ক্ষেত্রেও একই পন্থা অবলম্বন করতে চেয়েছিলেন আর সে জন্য ১ম দরপত্রে তাদের ঠিকাদার কাগজপত্রাদি প্রস্তুত করতে পারেনি বলে রি-টেন্ডার করা হয়। দ্বিতীয় দরপত্রের সময় নাসিমগ্রুপের সুবিধামত স্পেসিফিকেশন দিতে না পারায় (বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখির কারনে) ৭টি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশ গ্রহন করে। এখানে নাসিম গ্রুপের সমার্থিত টেকনো ড্রাগ ৫ম হওয়ায় এবং স¦মন্বয়ক তাবাসুমের সমার্থিত আরেকটি প্রতিষ্ঠান ওএমসি নামক প্রতিষ্ঠান ৪র্থ হওয়ায় সুবিধা করতে না পারায় এবং ওএমসির কাগজ পত্রাদি যথাযথ না থাকায় পুনরায় দরপত্র আহব্বানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উল্লেখ্য যে, ২য় দরপত্রে ৪টি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে যায়। তারা হল যথাক্রমে (ক) জেনটেক ইন্টারন্যাশনাল-৭৯,১২,৯৯,৯৮৪) টাকা। ((খ)ওএমসি-৮২,৫০,১৪,২৬৯.২১৪ টাকা, (গ)টেকনো ড্রাগ-৮৪,৬৪,৪২,৮৪০/ টাকা এবং (ঘ) রেনেটা লি:- ১৭,১৪,৪২,৮৩৭/ টাকা দর প্রদান করে। ৩য় দরপত্রে ওএমসি টেকনো ড্রাগের সাথে সমঝোতায় যায় যে, টেকনো ড্রাগ দরপত্র দাখিল করবে না । এ শর্তে তাদের কিছু আর্থিক সুবিধা দিবে। যা এমডি জালাল আহমেদ নিজ মুখে স্বীকার করেছিলেন। ৩য় দরপত্রে ওএমসির দরপত্র যাতে বৈধ হয় সে জন্য পিডি তাদের পক্ষে কিছু শর্ত শিথিল করে দেয়। সে অনুযায়ী ৩য় দরপত্রে মাত্র ৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ গ্রহন করে। এখানে ৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে (১) মেসাস জেনটেক ইন্টার ন্যাশনাল ১ম নিম্ন দরদাতা হিসাবে বিবেচিত হয় এবং তার প্রদত্ত দর-৭৬,৩৫,৮৫,৬৯৯/ টাকা যা পূর্বে প্রদত্ত দর অপেক্ষা ২,৭৭,১৪,২৮৫ টাকা কম। (খ) ওএমসি-৯৬,৯৭,২৮,৫৫২/ টাকা যা তাদের পূর্বের দর অপেক্ষা ১৪,৪৭,১৪,২৮৩/ টাকা বেশী। আর ৩য় নিম্ন দরদাতা রেনেটা লি: ৯৭,১৪,৪২,৮৩৭/- যা পূর্বে প্রদত্ত দরের সমান। এখানে লক্ষ্যনীয় ওএমসি সমন্বয়ক তাবাসুম, বর্তমান ডিজি এবং পিডির সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় পূর্বে প্রদত্ত দর অপেক্ষা ১৪,৪৭,৪২,৮৩৭ টাকা বেশী প্রদান করেছে যা মেকিং গেম ছাড়া সচরাচার ঘটে না।

এতকিছুর পরেও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ডিজি ড. মো: আবু সুফিয়ান তার নিয়ন্ত্রিত কমিটি দ্বারা নিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত দর ৭৬,৩৫,৮৫,৬৯৯/ টাকার দরপত্রটি যুক্তি সংগত কোন কারন ছাড়াই মিথ্যা তথ্য দিয়ে নন রেসপনসিভ করিয়ে ২০,৬১,৪২,৮৫৩/ টাকা বেশী সুপারিশ করিয়ে ওএমসিকে ৯৬,৯৭,২৮,৫৫২/ টাকায় কার্যাদেশ প্রদানের জন্য সুপারিশ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠান এবং উপদেষ্টাকে দিয়ে নথি অনুমোদন করিয়েছেন। এখানে ওএমসি প্রায় ২০ কোটি টাকা লেনদেন করবে বলে চুক্তিবদ্ধ এবং প্রায় ১০ কোটি টাকা লেনদেন করেছে বলে বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়।

 

ভারপ্রাপ্ত ডিজি ড. আবু সুফিয়ান অধিদপ্তরের গ্যারেজ মেরামত/রং করার নাম করে দরপত্র আহব্বান করে ২৫ লক্ষ টাকার কার্যাদেশ প্রদান করেন। কিন্তু বাস্তবে গ্যারেজের কোন কাজ না করে ভবনের ৫ম তলায় কর্মকর্তা/কর্মচারীদের চা-সিগারেট খাওয়ার জন্য সর্বমোট ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ২টা রুম তৈরী করেছেন। বাকী টাকা ডিজি/এডি জিল্লুর ও ঠিকাদার ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। যা বাস্তবে তদন্ত করলে প্রমাণিত হবে। একইভাবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাওয়ানোর জন্য ৪০ লক্ষ টাকার কার্যাদেশ দিয়েছেন এবং সেখান হতে প্রতিদিন ডিজি/পরিচালক প্রশাসন/বাজেট, এডি জিল্লুর দুপুরে খানা খান এবং রাতের খাবার বাসায় নিয়ে যান। গত বছরেও ৩৫ লক্ষ টাকা খরচ করে ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুনের জন্য বিগত বছরের টাকা হতে বর্তমান ডিজি ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং এ বছর ৩০ লক্ষ টাকার অনুমোদন দিয়েছেন। বাস্তবে ২ লক্ষ টাকাও খরচ করেন না। এছাড়াও বিভিন্ন খাতে প্রায় ১ কোটি টাকার অপ্রয়োজনীয় টেন্ডার করে সমূদয় টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

ভারপ্রাপ্ত ডিজি মূলত: একজন পরিচালক। আর একজন পরিচালক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমোদিত অগ্রানোগ্রাম অনুযায়ী সার্বক্ষনিক প্রাধিকার প্রাপ্ত নয়। কিন্তু বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মহা পরিচালক ড. মো: আবু সুফিয়ান ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাসায় সার্বক্ষনিক একটি এসিযুক্ত পাজেরো জীপ এবং নিজেও অফিসে একখানা এসিযুক্ত প্যারোডো জীপ ব্যবহার করছেন।

ড. সুফিয়ান কোন প্রকার নিয়ম নীতি ছাড়াই ৯ম ও ৬ষ্ঠ গ্রেডের কর্মকতাদের নিজে ইচ্ছামত আর্থিক সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে (জনপ্রতি-২-৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে) অহরহ বদলী করে যাচ্ছেন। যা তার সময়ে পরিসংখ্যন নিলেই প্রমানিত হবে।

ড. সুফিয়ান অধিদপ্তরের খামার শাখার দায়িত্বে থাকাকালীন হাজার হাজার টন পশুখাদ্য আমদানীর জন্য এনওসি ইস্যু করেছেন। বিনিময়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তিনি একজনের নামে ১০ হাজার টনের এনওসি দিয়ে (যা রেজিষ্টারে এন্টি থাকে) ডুপ্লিকেট আরোও ৩/৪টি একই নম্বরে এনওসি দিয়েছেন। যা তার সময়ে ইস্যুকৃত এনওসি পরীক্ষা করলে প্রমানিত হবে। তিনি বিগত সরকারের সময় আউট সোর্সিং এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রতি ২/৩ লক্ষ টাকা নিয়েছেন।

ড. সুফিয়ান একজন স্বঘোষিত ঘুসখোর ও দূর্নীতিবাজ হিসাবে সকলের নিকট পরিচিত। তিনি ঘুষের টাকায় বনানী ডিওএইচএসএ ৩২০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট কিনেছেন। সাভারে প্রায় ২ বিঘা জমি কিনেছেন। দেশের বাড়ীতে কোটি টাকা ব্যয়ে বাড়ী নির্মাণ করা সহ প্রায় ৫০ বিঘা ধানের জমি ক্রয় করেছেন। এছাড়া এফডিআর, সঞ্চয়পত্র তো রয়েছেই। যা একজন সরকারি চাকুরীজীবির আয়ের সাথে সংগতিপুর্ণ নয় । তার ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব নিলেই বিষয়টি প্রমানিত হবে।

ভারপ্রাপ্ত ডিজি ড. সুফিয়ান সর্বশেষ দুর্নীতি করেছেন বিগত রোজার পূর্বে। মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে দিয়ে কথিত ন্যয্য মূল্যে দরিদ্র মানুষের মাঝে মাংস, দুধ, ডিম, মুরগী বিক্রি উদ্বোধনের নামে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এবং ৪ হাজার টাকার গাড়ী ১১ হাজার টাকায় ভাড়া দেখিয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যা বিশদভাবে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য যে, সাভার ডেইরী ফার্মে দুধ ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও রোজার মাসে কথিত ভূর্তুকী মূল্য ৮০ টাকা দরে বিক্রি করে সেখান থেকে এবং সরকারী খামার ওহতে গরুর প্রদান করে ৬৫০/ টাকা কেজি মূল্যে মাংস বিক্রি দেখিয়ে প্রায় কোটি টাকা আদায় করেছেন এই ডিজি ড. আবু সুফিয়ান। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে একজন সাংবাদিক রীট মামলা দায়ের করেছেন। ড. মো: আবু সুফিয়ান বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগি দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদেরকে তার সহযোগী হিসাবে পদায়ন করেছেন,এখনো করছেন।

তিনি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে আর কিছুদিন ডিজির দায়িত্বে থাকলে এই অধিদপ্তরটি দুর্নীতির সাগরে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করা হয়েছে।

অভিযোগকারী এসব অনিয়ম দুর্নীতি তদন্ত করার জন্য দুদক চেয়ারম্যানের পদক্ষেপ কামনা করেছেন। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য অভিযোগের অনুলিপি প্রধান উপদেষ্টা ও মন্ত্রী পরিষদ সচিবকেও প্রদান করা হয়েছে।

সারাক্ষণ বার্তার প্রতিনিধি এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড.আবু সুফিয়ান বলেন, আমি কোন দুর্নীতি করি না।