ঢাকা ১০:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ:
নেপথ্যে ১০ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য: প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে হাইকোর্টের আপীল বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করে ৫৪ জন কর্মচারি নিয়োগ, আরো প্রায় ৬০০জনের নিয়োগ চুড়ান্ত!  রাজৈরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন কৃষক দল ও পূজা উদযাপন ফ্রন্টের নেতৃবৃন্দ। ফরিদপুরের ট্রাক চাপায় এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।  মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন তোফায়েল আহমেদ। জরুরি ভর্তি করা হল হাসপাতালে। বহু বছর সেনাবাহিনীর থাবায় মুখোশ উন্মোচন হলো মাদক ব্যবসায়ী কাশেম ওরফে ফেন্সি কাসেমের। শেরপুরে দলিত নারীদের মুষ্টির চালে “দুর্গা পূজা”। “গীতার আলো ঘরে ঘরে জ্বালো” এ শ্লোগানে মুখরিত মাদারীপুর। মনের মাধুরী মিশিয়ে সাজাচ্ছে দেবী দুর্গাকে।মন্ডপে মন্ডপে চলছে মা’কে বরণের প্রস্তুতি। এক রাতের রক্তগাথা: শাপলা চত্বরে নৃশংসতার ১২ বছর। বিসিআইসি: খাদ্য নিরাপত্তা ও শিল্পায়নের অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান।

বিসিআইসি: খাদ্য নিরাপত্তা ও শিল্পায়নের অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান।

  • সারাক্ষণ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:৩৬:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৪৫ জন সংবাদটি পড়েছেন

 

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) দেশের কৃষি ও শিল্পখাতের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি।

১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিসিআইসি সার উৎপাদন, আমদানি বিকল্প রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন, সার পরিবহন ও বাজারজাতকরণসহ বিভিন্ন শিল্প কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং শিল্পায়নের প্রসারে এর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

দেশে বর্তমানে পাঁচটি ইউরিয়া সার কারখানা আছে। এর মধ্যে একটি টিএসপি সার কারখানা ও একটি ডিএপি সার কারখানা রয়েছে। যার মধ্যে, ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা নরসিংদী, যমুনা সার কারখানা জামালপুর, শাহজালাল সার কারখানা সিলেট, সিইউএফএল সার কারখানা চট্টগ্রাম অন্যতম৷

বর্তমানে গ্যাস সংকট, কাঁচামালের উচ্চমূল্য, বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাঘাতসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখে বিসিআইসি কিছু কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবুও দেশের সার চাহিদা পূরণে বিসিআইসি অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

বিসিআইসির গুরুত্ব

সার উৎপাদন

বিসিআইসির প্রধান কাজ হলো সার উৎপাদন করা। দেশের মোট ইউরিয়া সারের প্রায় ৭০ শতাংশই বিসিআইসির অধীনস্থ কারখানাগুলোতে উৎপাদিত হয়। দেশের কৃষকদের জন্য সময়মতো সার সরবরাহ করা খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে অত্যন্ত জরুরি।

আমদানি বিকল্প রাসায়নিক দ্রব্যের উৎপাদন

বিসিআইসি শুধু সার নয়, বিভিন্ন রাসায়নিক পণ্য উৎপাদনেও অবদান রাখে। দেশীয়ভাবে উৎপাদিত রাসায়নিক দ্রব্য আমদানি নির্ভরতা কমায় এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করে।

কারখানা পরিচালনা

বর্তমানে বিসিআইসি’র অধীনে ১২টি বড় কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউরিয়া সার কারখানা, অ্যামোনিয়া কারখানা, ড্যাপ কারখানা ইত্যাদি। এসব কারখানায় হাজার হাজার শ্রমিক কর্মরত এবং দেশীয় শিল্প খাত সচল রাখতে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ কাঁচামাল প্রক্রিয়াজাত করা হয়।

পরিবহন ও বিপণন

বিসিআইসি উৎপাদিত সার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গুদামে পৌঁছে দেয় এবং কৃষকদের কাছে বিতরণের ব্যবস্থা করে। সার সময়মতো মাঠপর্যায়ে পৌঁছানো দেশের কৃষি উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য। বিসিআইসি পরিবহন চেইন ও বিপণন ব্যবস্থাপনা উন্নত করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান

বিসিআইসি দেশের শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম অংশীদার। সার ও রাসায়নিক উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বাড়ছে, কৃষকদের আয় বাড়ছে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে। পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষ এই খাত থেকে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান পাচ্ছে।

বর্তমান চ্যালেঞ্জ

যদিও বিসিআইসি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবুও কয়েকটি বড় সমস্যা রয়েছে—

গ্যাস সংকট: ইউরিয়া সার উৎপাদনের জন্য প্রচুর পরিমাণে গ্যাস লাগে। গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি উৎপাদন কমিয়ে দেয়।

কাঁচামালের উচ্চমূল্য: আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কারখানার পুরনো যন্ত্রপাতি: অনেক কারখানা পুরনো প্রযুক্তিতে চলছে। উৎপাদন ব্যয় বেশি এবং দক্ষতা কম।

পরিচালনাগত জটিলতা: সরকারি আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হয়, ফলে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. হুমায়ুন কবির বলেন, “বিসিআইসি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মূল ভূমিকা রাখে। তবে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং নতুন কারখানা স্থাপন ছাড়া এই খাত টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। গ্যাসের বিকল্প উৎস, যেমন এলএনজি ব্যবহারের দিকে যেতে হবে।”

শিল্প বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার সামিউল হক বলেন, “বর্তমান কারখানাগুলোকে আধুনিকায়ন করতে হবে। উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে দক্ষতা বাড়ানো গেলে বিসিআইসি লোকসান থেকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপ নিতে পারবে। একইসাথে পরিবহন ও বিপণনে ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম চালু করতে হবে।”

খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গুরুত্ব

বাংলাদেশ একটি কৃষি নির্ভর দেশ। কৃষিতে উৎপাদনশীলতা বজায় রাখতে রাসায়নিক সার অপরিহার্য। বিসিআইসি উৎপাদন কমিয়ে দিলে কৃষকেরা সারের সংকটে পড়তে পারে, যা খাদ্য উৎপাদন কমিয়ে দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। তাই সরকারের জন্য বিসিআইসির উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো একটি কৌশলগত প্রয়োজন।

করণীয়

গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ। কারখানার যন্ত্রপাতি আধুনিকায়ন। উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন। দুর্নীতি ও অপচয় রোধে স্বচ্ছতা বাড়ানো। গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) তে বিনিয়োগ বাড়ানো।

বিসিআইসি বাংলাদেশের কৃষি ও শিল্প খাতের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য প্রতিষ্ঠান। সার উৎপাদন থেকে শুরু করে রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন, বিপণন ও বিতরণে এর ভূমিকা সরাসরি দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে। সরকার যদি বিসিআইসিকে আধুনিক প্রযুক্তি, অবকাঠামো এবং পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ দিয়ে শক্তিশালী করতে পারে, তবে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শিল্পায়নের গতি আরও ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে।

বিসিআইসিকে আর লোকসান নয়, লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা সময়ের দাবি। উৎপাদনশীলতা বাড়াতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। কৃষি খাতের জন্য সার সরবরাহ নিশ্চিত করা কেবল একটি অর্থনৈতিক দায়িত্ব নয়, এটি জাতীয় নিরাপত্তার অংশ।

Tag :
About Author Information

GOURANGA BOSE

জনপ্রিয় সংবাদ

নেপথ্যে ১০ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য: প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে হাইকোর্টের আপীল বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করে ৫৪ জন কর্মচারি নিয়োগ, আরো প্রায় ৬০০জনের নিয়োগ চুড়ান্ত! 

বিসিআইসি: খাদ্য নিরাপত্তা ও শিল্পায়নের অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান।

আপডেট সময় : ০২:৩৬:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) দেশের কৃষি ও শিল্পখাতের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি।

১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিসিআইসি সার উৎপাদন, আমদানি বিকল্প রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন, সার পরিবহন ও বাজারজাতকরণসহ বিভিন্ন শিল্প কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং শিল্পায়নের প্রসারে এর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

দেশে বর্তমানে পাঁচটি ইউরিয়া সার কারখানা আছে। এর মধ্যে একটি টিএসপি সার কারখানা ও একটি ডিএপি সার কারখানা রয়েছে। যার মধ্যে, ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা নরসিংদী, যমুনা সার কারখানা জামালপুর, শাহজালাল সার কারখানা সিলেট, সিইউএফএল সার কারখানা চট্টগ্রাম অন্যতম৷

বর্তমানে গ্যাস সংকট, কাঁচামালের উচ্চমূল্য, বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাঘাতসহ নানা চ্যালেঞ্জের মুখে বিসিআইসি কিছু কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবুও দেশের সার চাহিদা পূরণে বিসিআইসি অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

বিসিআইসির গুরুত্ব

সার উৎপাদন

বিসিআইসির প্রধান কাজ হলো সার উৎপাদন করা। দেশের মোট ইউরিয়া সারের প্রায় ৭০ শতাংশই বিসিআইসির অধীনস্থ কারখানাগুলোতে উৎপাদিত হয়। দেশের কৃষকদের জন্য সময়মতো সার সরবরাহ করা খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে অত্যন্ত জরুরি।

আমদানি বিকল্প রাসায়নিক দ্রব্যের উৎপাদন

বিসিআইসি শুধু সার নয়, বিভিন্ন রাসায়নিক পণ্য উৎপাদনেও অবদান রাখে। দেশীয়ভাবে উৎপাদিত রাসায়নিক দ্রব্য আমদানি নির্ভরতা কমায় এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করে।

কারখানা পরিচালনা

বর্তমানে বিসিআইসি’র অধীনে ১২টি বড় কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউরিয়া সার কারখানা, অ্যামোনিয়া কারখানা, ড্যাপ কারখানা ইত্যাদি। এসব কারখানায় হাজার হাজার শ্রমিক কর্মরত এবং দেশীয় শিল্প খাত সচল রাখতে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ কাঁচামাল প্রক্রিয়াজাত করা হয়।

পরিবহন ও বিপণন

বিসিআইসি উৎপাদিত সার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গুদামে পৌঁছে দেয় এবং কৃষকদের কাছে বিতরণের ব্যবস্থা করে। সার সময়মতো মাঠপর্যায়ে পৌঁছানো দেশের কৃষি উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য। বিসিআইসি পরিবহন চেইন ও বিপণন ব্যবস্থাপনা উন্নত করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান

বিসিআইসি দেশের শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম অংশীদার। সার ও রাসায়নিক উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বাড়ছে, কৃষকদের আয় বাড়ছে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে। পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষ এই খাত থেকে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান পাচ্ছে।

বর্তমান চ্যালেঞ্জ

যদিও বিসিআইসি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবুও কয়েকটি বড় সমস্যা রয়েছে—

গ্যাস সংকট: ইউরিয়া সার উৎপাদনের জন্য প্রচুর পরিমাণে গ্যাস লাগে। গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি উৎপাদন কমিয়ে দেয়।

কাঁচামালের উচ্চমূল্য: আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কারখানার পুরনো যন্ত্রপাতি: অনেক কারখানা পুরনো প্রযুক্তিতে চলছে। উৎপাদন ব্যয় বেশি এবং দক্ষতা কম।

পরিচালনাগত জটিলতা: সরকারি আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হয়, ফলে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. হুমায়ুন কবির বলেন, “বিসিআইসি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মূল ভূমিকা রাখে। তবে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং নতুন কারখানা স্থাপন ছাড়া এই খাত টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। গ্যাসের বিকল্প উৎস, যেমন এলএনজি ব্যবহারের দিকে যেতে হবে।”

শিল্প বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার সামিউল হক বলেন, “বর্তমান কারখানাগুলোকে আধুনিকায়ন করতে হবে। উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে দক্ষতা বাড়ানো গেলে বিসিআইসি লোকসান থেকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপ নিতে পারবে। একইসাথে পরিবহন ও বিপণনে ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম চালু করতে হবে।”

খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গুরুত্ব

বাংলাদেশ একটি কৃষি নির্ভর দেশ। কৃষিতে উৎপাদনশীলতা বজায় রাখতে রাসায়নিক সার অপরিহার্য। বিসিআইসি উৎপাদন কমিয়ে দিলে কৃষকেরা সারের সংকটে পড়তে পারে, যা খাদ্য উৎপাদন কমিয়ে দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। তাই সরকারের জন্য বিসিআইসির উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো একটি কৌশলগত প্রয়োজন।

করণীয়

গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ। কারখানার যন্ত্রপাতি আধুনিকায়ন। উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন। দুর্নীতি ও অপচয় রোধে স্বচ্ছতা বাড়ানো। গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) তে বিনিয়োগ বাড়ানো।

বিসিআইসি বাংলাদেশের কৃষি ও শিল্প খাতের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য প্রতিষ্ঠান। সার উৎপাদন থেকে শুরু করে রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন, বিপণন ও বিতরণে এর ভূমিকা সরাসরি দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে। সরকার যদি বিসিআইসিকে আধুনিক প্রযুক্তি, অবকাঠামো এবং পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ দিয়ে শক্তিশালী করতে পারে, তবে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শিল্পায়নের গতি আরও ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে।

বিসিআইসিকে আর লোকসান নয়, লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা সময়ের দাবি। উৎপাদনশীলতা বাড়াতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। কৃষি খাতের জন্য সার সরবরাহ নিশ্চিত করা কেবল একটি অর্থনৈতিক দায়িত্ব নয়, এটি জাতীয় নিরাপত্তার অংশ।