ঢাকা ০৫:৪০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ:
জালিয়াতির চক্রে রাজউক।নথি জালিয়াতিতে জড়িত রাজউকের বিশেষ চক্রের সাথে কর্মকর্তাদের যোগসাজশ। লক্ষ্মীপুরে আলোচিত যুবলীগ–ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার উখিয়ায় অস্ত্র-গুলিসহ আরাকান আর্মির এক সদস্যের আত্মসমর্পণ নিজের বাল্যবিবাহ নিজেই বন্ধ করল অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিতু চিরিরবন্দরে বিআরটিসি বাস খাদে, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন যাত্রীরা আউলিয়াপুরে শিশু ও যুব ফোরামের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি মাদারীপুর রাজৈর থানা হেফাজত হতে মাদক মামলায় অভিযুক্ত আসামির পলায়ন। উলিপুরে ৫ বছরের কন্যাশিশুকে ধ’র্ষণের অভিযোগে ব্যক্তি গ্রেফতার সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অভিযোগে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাকির খান গ্রেফতার চিরিরবন্দর বিন্যাকুড়ি ইছামতী নদীতে ৮ বছর বয়সী শিশুর নদীতে পড়ে মৃত্যু

চলচ্চিত্রের অনুদান নিয়ে তামাশা!

  • সারাক্ষণ ডেক্স
  • আপডেট সময় : ০১:৪৫:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
  • ১০৬ জন সংবাদটি পড়েছেন

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩২টি চলচ্চিত্রকে মোট ১৩ কোটি টাকা সরকারি অনুদান দেওয়ার তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ১২টি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ২০টি। প্রতি বছরের মতো এবারও অনুদান কমিটির স্বচ্ছতা ও স্বজনপ্রীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা।

অনুদানের প্রক্রিয়াকে ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা চলছে এখনও। সামাজিকমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন বিনোদন অঙ্গনের অনেকে। চলচ্চিত্রের আঁতুড়ঘর এফডিসি। খোদ এফডিসির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত মূলধারার মানুষেরা অনুদান থেকে হয়েছেন বঞ্চিত। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

অভিযোগ উঠেছে যে, যারা অনুদান দেবেন, তারাই এবার নিয়েছেন অনুদান! তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সিনেমা নির্মাণের জন্য অনুদানপ্রাপ্ত মো. আবিদ মল্লিক চলচ্চিত্র অনুদান উপকমিটির সদস্য। চলচ্চিত্রবিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি এবং চলচ্চিত্র অনুদান স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন সাদিয়া খালিদ রীতি।

এদিকে, চলচ্চিত্রবিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটিতে রয়েছেন মো. আরিফুর রহমান ও মুশফিকুর রহমান। এ ছাড়াও ফিল্ম আর্কাইভ বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য লাবিব নাজমুস ছাকিব এবং তথ্য মন্ত্রণালয় সংস্কারে সার্চ কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাইদুল আলম খান।

অনুদান নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে জুরি বোর্ডের সদস্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজক আকরাম খান বলেন, ‘যে সিনেমাগুলোকে সর্বোচ্চ মার্ক দিয়েছি সেই সিনেমাগুলোই অনুদানের তালিকায় এসেছে। এতে কোনো চাপ ছিল না। নিয়মনীতি মেনেই সিনেমগুলোকে অনুদান দেওয়া হয়েছে। অনুদান নিয়ে প্রশ্ন তোলার বিষয়টি অবান্তর।’

বিষয়টি নিয়ে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি আহমেদ মুজতবা জামাল বলেন, ‘আমি এই অনুদান কমিটিতে মাসখানেকের মতো ছিলাম। পরে ব্যক্তিগত কারণে অব্যাহতি নিয়ে চলে এসেছি। শুনেছি, এবার অনুদান কমিটি পিচিং করেই অনুদান দেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়া মেনে যদি কোনো অনুদান দেওয়া হয় তাহলে ফাঁকফোকড়ের কোনো সুযোগ নেই।’

বরেণ্য নির্মাতা মতিন রহমান বলেন, ‘চলচ্চিত্রের অনুদান নিয়ে বিতর্ক নতুন কোনো ঘটনা নয়, যারা পাবেন না তারা বিতর্ক নিয়ে মাঠে থাকবেন। পরের বছর আবার তারা পাবেন। এটিই নিয়ম। যারা বিতর্ক করছেন তাদের শাহবাগের মোড়ে আমরা আগেও দেখেছি। যারা অনুদান বঞ্চিত হন তারা সবসময়ই অহেতুক বিতর্কের সৃষ্টি করেন। সরকারে প্রতিনিধিদের তো একটি দায়িত্ব আছে। সিনেমার প্রতি তাদের দায়িত্ব রয়েছে। এমনিতে তারা নির্বাচিত হননি। যাদের অনুদান কমিটিতে নির্বাচন করা হয়েছে কোনো না কোনো যোগ্যতার ভিত্তিতে করা হয়েছে। তাদের নিজম্ব চিন্তা থেকেই তারা সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছেন। এটিকে অবহেলা করার কিছু নেই।’

স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ
সরকারি অনুদান প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ। গত শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটি বলেছে, ‘‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, জনগণের করের টাকায় পরিচালিত সরকারি চলচ্চিত্র অনুদান প্রক্রিয়াকে ঘিরে সম্প্রতি ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা তৈরি হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের অনুদান তালিকা ১ জুলাই, ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে চলচ্চিত্রশিল্প এবং জনমহলে ‘তুমুল আলোচনা-সমালোচনা’ শুরু হয়েছে। আমরা মনে করি, এই প্রক্রিয়া অবশ্যই স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক ও পক্ষপাতহীন হতে হবে। এটি যেন কেবল পরিচিত মুখদের জন্য নয়, বরং প্রতিভাবান নতুন নির্মাতাদের জন্যও সমানভাবে উন্মুক্ত থাকে আগামী দিনগুলোতেও।’’

ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিতর্ক ও উদ্বেগের মূল কারণ তুলে ধরেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ।
অস্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ার কারণেই অনুদান নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে উল্লেখ করে তারা জানায়, জুরিবোর্ডসহ সব কমিটিতে আমলাদের আধিক্য বেশি, যার ফলে সংশ্লিষ্ট চলচ্চিত্র বোর্ডের সদস্যরা কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন না। মাত্র ২-৩ মিনিটের পিচিংয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নম্বর প্রদান বা বাছাইয়ের কোনো লিখিত মানদণ্ড না থাকায় এই প্রক্রিয়াটির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

চূড়ান্ত নম্বর ও শর্টলিস্ট প্রকাশ, আপিলের সুযোগ, স্বার্থের সংঘাত রোধ, স্পষ্ট নম্বর প্রদানের মানদণ্ড, চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট কমিটি গঠন, স্কোর উন্মুক্তকরণসহ আরও কয়েকটি বিষয় অনুদান নিয়ে বিতর্ক ও উদ্বেগের কারণ উল্লেখ করা হয়েছে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মমর পদত্যাগ
গত ১ জুলাই অনুদানের প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পর অনুদান বণ্টন নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে আসে তারকা অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মমর পদত্যাগের খবর। অভিনেত্রী জানান, তিনি গত ২৫ মে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর ব্যক্তিগত ও পেশাগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

মম বলেন, ‘ক্ষমতার কাছে যেহেতু আমার কোনো ব্যক্তিগত চাওয়া ছিল না, তাই কাজ করার ইচ্ছা নিয়েই এসেছিলাম। সেই কাজ করার সুযোগটুকু পাইনি। তাই মনে হয়েছে, আমার জায়গায় কেউ এসে দায়িত্ব পালন করলে কমিটির জন্য ভালো হবে।’

তিনি আরও জানান, অনুদানের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বাছাই কিংবা চূড়ান্তকরণ কোনোটিতেই তিনি যুক্ত ছিলেন না।

মমর ভাষায়, ‘কাজ করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু নিয়মের জটিলতা, পুরোনো কাঠামোর বেড়াজাল, আর আমলাতান্ত্রিক ধীরগতি সব মিলিয়ে নতুন কিছু করার কোনো সম্ভাবনা দেখিনি। তাই আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। অভিযোগ করার কিছু নেই, এটি আমাদের সিস্টেমের জটিলতা। শুধু ফিরে এসেছি নিজের জায়গায়। এসেছিলাম রাষ্ট্রের জন্য কাজ করতে। ক্ষমতার কাছে গেলে অনেকের চেহারা বদলে যায়। আমি চাইনি আমার চেহারাটা বদলে যাক। তাই ফিরে এলাম।’

Tag :
About Author Information

GOURANGA BOSE

জনপ্রিয় সংবাদ

জালিয়াতির চক্রে রাজউক।নথি জালিয়াতিতে জড়িত রাজউকের বিশেষ চক্রের সাথে কর্মকর্তাদের যোগসাজশ।

চলচ্চিত্রের অনুদান নিয়ে তামাশা!

আপডেট সময় : ০১:৪৫:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩২টি চলচ্চিত্রকে মোট ১৩ কোটি টাকা সরকারি অনুদান দেওয়ার তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ১২টি এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ২০টি। প্রতি বছরের মতো এবারও অনুদান কমিটির স্বচ্ছতা ও স্বজনপ্রীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা।

অনুদানের প্রক্রিয়াকে ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা চলছে এখনও। সামাজিকমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন বিনোদন অঙ্গনের অনেকে। চলচ্চিত্রের আঁতুড়ঘর এফডিসি। খোদ এফডিসির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত মূলধারার মানুষেরা অনুদান থেকে হয়েছেন বঞ্চিত। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

অভিযোগ উঠেছে যে, যারা অনুদান দেবেন, তারাই এবার নিয়েছেন অনুদান! তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সিনেমা নির্মাণের জন্য অনুদানপ্রাপ্ত মো. আবিদ মল্লিক চলচ্চিত্র অনুদান উপকমিটির সদস্য। চলচ্চিত্রবিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি এবং চলচ্চিত্র অনুদান স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন সাদিয়া খালিদ রীতি।

এদিকে, চলচ্চিত্রবিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটিতে রয়েছেন মো. আরিফুর রহমান ও মুশফিকুর রহমান। এ ছাড়াও ফিল্ম আর্কাইভ বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য লাবিব নাজমুস ছাকিব এবং তথ্য মন্ত্রণালয় সংস্কারে সার্চ কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাইদুল আলম খান।

অনুদান নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে জুরি বোর্ডের সদস্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রযোজক আকরাম খান বলেন, ‘যে সিনেমাগুলোকে সর্বোচ্চ মার্ক দিয়েছি সেই সিনেমাগুলোই অনুদানের তালিকায় এসেছে। এতে কোনো চাপ ছিল না। নিয়মনীতি মেনেই সিনেমগুলোকে অনুদান দেওয়া হয়েছে। অনুদান নিয়ে প্রশ্ন তোলার বিষয়টি অবান্তর।’

বিষয়টি নিয়ে রেইনবো চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি আহমেদ মুজতবা জামাল বলেন, ‘আমি এই অনুদান কমিটিতে মাসখানেকের মতো ছিলাম। পরে ব্যক্তিগত কারণে অব্যাহতি নিয়ে চলে এসেছি। শুনেছি, এবার অনুদান কমিটি পিচিং করেই অনুদান দেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়া মেনে যদি কোনো অনুদান দেওয়া হয় তাহলে ফাঁকফোকড়ের কোনো সুযোগ নেই।’

বরেণ্য নির্মাতা মতিন রহমান বলেন, ‘চলচ্চিত্রের অনুদান নিয়ে বিতর্ক নতুন কোনো ঘটনা নয়, যারা পাবেন না তারা বিতর্ক নিয়ে মাঠে থাকবেন। পরের বছর আবার তারা পাবেন। এটিই নিয়ম। যারা বিতর্ক করছেন তাদের শাহবাগের মোড়ে আমরা আগেও দেখেছি। যারা অনুদান বঞ্চিত হন তারা সবসময়ই অহেতুক বিতর্কের সৃষ্টি করেন। সরকারে প্রতিনিধিদের তো একটি দায়িত্ব আছে। সিনেমার প্রতি তাদের দায়িত্ব রয়েছে। এমনিতে তারা নির্বাচিত হননি। যাদের অনুদান কমিটিতে নির্বাচন করা হয়েছে কোনো না কোনো যোগ্যতার ভিত্তিতে করা হয়েছে। তাদের নিজম্ব চিন্তা থেকেই তারা সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছেন। এটিকে অবহেলা করার কিছু নেই।’

স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ
সরকারি অনুদান প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ। গত শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সংগঠনটি বলেছে, ‘‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, জনগণের করের টাকায় পরিচালিত সরকারি চলচ্চিত্র অনুদান প্রক্রিয়াকে ঘিরে সম্প্রতি ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা তৈরি হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের অনুদান তালিকা ১ জুলাই, ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে চলচ্চিত্রশিল্প এবং জনমহলে ‘তুমুল আলোচনা-সমালোচনা’ শুরু হয়েছে। আমরা মনে করি, এই প্রক্রিয়া অবশ্যই স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক ও পক্ষপাতহীন হতে হবে। এটি যেন কেবল পরিচিত মুখদের জন্য নয়, বরং প্রতিভাবান নতুন নির্মাতাদের জন্যও সমানভাবে উন্মুক্ত থাকে আগামী দিনগুলোতেও।’’

ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিতর্ক ও উদ্বেগের মূল কারণ তুলে ধরেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ।
অস্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ার কারণেই অনুদান নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে উল্লেখ করে তারা জানায়, জুরিবোর্ডসহ সব কমিটিতে আমলাদের আধিক্য বেশি, যার ফলে সংশ্লিষ্ট চলচ্চিত্র বোর্ডের সদস্যরা কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন না। মাত্র ২-৩ মিনিটের পিচিংয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নম্বর প্রদান বা বাছাইয়ের কোনো লিখিত মানদণ্ড না থাকায় এই প্রক্রিয়াটির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

চূড়ান্ত নম্বর ও শর্টলিস্ট প্রকাশ, আপিলের সুযোগ, স্বার্থের সংঘাত রোধ, স্পষ্ট নম্বর প্রদানের মানদণ্ড, চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট কমিটি গঠন, স্কোর উন্মুক্তকরণসহ আরও কয়েকটি বিষয় অনুদান নিয়ে বিতর্ক ও উদ্বেগের কারণ উল্লেখ করা হয়েছে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মমর পদত্যাগ
গত ১ জুলাই অনুদানের প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পর অনুদান বণ্টন নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে আসে তারকা অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মমর পদত্যাগের খবর। অভিনেত্রী জানান, তিনি গত ২৫ মে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর ব্যক্তিগত ও পেশাগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

মম বলেন, ‘ক্ষমতার কাছে যেহেতু আমার কোনো ব্যক্তিগত চাওয়া ছিল না, তাই কাজ করার ইচ্ছা নিয়েই এসেছিলাম। সেই কাজ করার সুযোগটুকু পাইনি। তাই মনে হয়েছে, আমার জায়গায় কেউ এসে দায়িত্ব পালন করলে কমিটির জন্য ভালো হবে।’

তিনি আরও জানান, অনুদানের যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বাছাই কিংবা চূড়ান্তকরণ কোনোটিতেই তিনি যুক্ত ছিলেন না।

মমর ভাষায়, ‘কাজ করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু নিয়মের জটিলতা, পুরোনো কাঠামোর বেড়াজাল, আর আমলাতান্ত্রিক ধীরগতি সব মিলিয়ে নতুন কিছু করার কোনো সম্ভাবনা দেখিনি। তাই আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। অভিযোগ করার কিছু নেই, এটি আমাদের সিস্টেমের জটিলতা। শুধু ফিরে এসেছি নিজের জায়গায়। এসেছিলাম রাষ্ট্রের জন্য কাজ করতে। ক্ষমতার কাছে গেলে অনেকের চেহারা বদলে যায়। আমি চাইনি আমার চেহারাটা বদলে যাক। তাই ফিরে এলাম।’