মাগুরা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অবৈধ নিয়োগে ১৯ বছর সরকারি চাকুরী করছে মো: কামরুজ্জামান। তার বাড়ী পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলায়। দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত হওয়া সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর ভাই তিনি। আর সেই যোগ্যতাতেই বয়স লুকিয়ে সরকারি চাকুরি বাগিয়ে নিয়ে আজ ১৯ বছর নির্বিঘ্নে চাকুরি করছেন ,বেতন ভাতা নিচ্ছেন, এমন কি পদন্নোতিও পেয়েছেন। নিম্নমান সহকারী থেকে তিনি এখন মাগুরা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চমান সহকারীর দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি সহ স্টোরের মালামাল চুরি করে বিক্রির অভিযোগ আছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর হতে গত ২১-০১-২০০৬ ইং তারিখে প্রার্থীর বয়স ১৮ হতে সর্বোচ্চ ৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে মর্মে ০২ জানুয়ারী ২০০৬ ইং তারিখে জাতীয় পত্রিকা দৈনিক নয়া দিগন্তে ৬৬ টি পদের বিপরীতে নিয়োগ প্রদান করা হয়। আলোচিত কর্মচারী মো: কামরুজ্জামানকে উক্ত দপ্তর স্মারক নং-৪৪৬০, তাং-২৭-০৬-২০০৬ ইং মূলে নিম্নমান সহকারি পদে মো: কামরুজ্জামানকে উক্ত দপ্তর স্মারক নং-৪৪৬০, তাং-২৭-০৬-২০০৬ ইং মূলে নিয়োগ প্রদান করেন। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী উক্ত কর্মচারীর বয়স ২১-০১-২০০৬ ইং তারিখেই ৩৩ বছর ০১ মাস ২৬ দিন অতিক্রম করে। যা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও সরকারী বিধি অনুয়ায়ী সম্পর্ণ অবৈধ এবং স্বজনপ্রীতির নমুনা বহন করে বিধায় সরাসরি বাতিল যোগ্য।
এ ছাড়া মো: কামরুজ্জামান অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পরে তার আপন মামাত ভাই মো: জামানুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, খুলনা স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে মাগুরা জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে উচ্চমান সহকারী পদে দায়িত্ব প্রদান করেন। সেই থেকে মো: কামরুজ্জামান মো: জামানুর রহমানের হয়ে সরকারী মজুদকৃত মালামাল গোপনে বিক্রয়, বিভিন্ন উপজেলা ও জেলার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে চলছেন যা বিভাগীয় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মূলত এর পিছনে অর্থলোভী তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী মো: জামানুর রহমান সরাসরি জড়িত রয়েছেন।
আরো জানাগেছে, মো: জামানুর রহমান এর বাড়ি কুষ্টিয়া শহরে এবং কুষ্টিয়ার সাবেক এমপি আওয়ামী দোসর মো: মাহবুবউল আলম হানিফ ও কুষ্টিয়ার আরেক সাবেক এমপি আওয়ামী দোসর মো: হাসানুল হক ইনুর পরমাত্মীয় এবং আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় মো: জামানুর রহমানের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও রাজশাহীতে মিছিল মিটিং, ঝাটা মিছিল, সাময়িক বরখাস্ত ইত্যাদি ঘটনার পরেও তিনি চাকুরীতে বহাল রয়েছেন। আওয়ামী লীগের এমপি ও নেতাদের কারনে তার কিছুই করা যায়নি।
ইতোমধ্যে ঢাকা ও খুলনা থেকে প্রকাশিত জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকায় মো: জামানুর রহমানের নামে সীমাহীন দুর্নীতি, আর্থিক অনিয়ম, বেনামীয় টেন্ডার বানিজ্য ও তাহার নিয়ন্ত্রিত জেলা উপজেলা কর্মকর্তাদের সাথে অসদাচারণ, চাকুরির লোভ দেখিয়ে তরুণীদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক ও নানাবিধ সংবাদ প্রকাশ হয়েছে যা তদন্তাধীন রয়েছে।
অবৈধ নিয়োগে মো: কামরুজ্জামানকে ৩৩ বছর ১ মাস ২৬ দিন বয়সে অবৈধভাবে যে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে তা মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশে সচিবালয়ের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক সম্পূর্ণ অবৈধ, নিয়োগ বাতিল যোগ্যসহ এবং এ যাবৎ যে অর্থ বেতনভাতাদি বাবদ অবৈধভাবে উত্তোলন করেছেন তা আদায়যোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে গত ২৩/১১/২০২৪ ইং তারিখে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিব বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ঝিনাইদহ জেলার বেশ কয়েকজন সচেতন নাগরিক। কিন্তু পরিতাপের বিষয় সেই লিখিত অভিযোগটি ধাপাচাপা পড়ে আছে।