প্রধানমন্ত্রীর পদে সময়ের ক্ষেত্রে মেয়াদ বার নয়, বছর চায় বিএনপি এমনটা জানিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পঞ্চম সংশোধনীতে ফিরতে চায় দলটি।
রোববার (২২ জুন) ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আজকের আলোচনার টেবিলে ছিল প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সংবিধানের মূলনীতি ও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারনের জন্য একটা অথরিটি গঠন। তবে দুই বিষয়ে আলোচনা হলেও সংসদীয় আসনে নির্বাচনের সীমানা নিয়ে আলোচনা হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের লিখিত বক্তব্যে ও ৩১ দফার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছি। বলেছি, একই ব্যক্তি পর পর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। এখানে মেয়াদটা নিয়ে বিভিন্ন সময় আলোচনা এসেছে কারও কারও দুইবারের ব্যাখ্যা আসছে। বারের ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা আসছে। মনে করেন, একজন ব্যক্তি তিন মাসের জন্য প্রধানমন্ত্রী হলেন, তিন মাস পর মেজরিটি পার্টি আরেকজনকে প্রধানমন্ত্রী করলেন, তারপর আগেরজন প্রধানমন্ত্রী হলেন, পরপর দুইবার মেয়াদ তো পূর্ণ হয়ে যায়। দুইবার, তিনবার, পাঁচবারও যেকোনো কেউ এক বছরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন। বার নিয়ে এ ব্যাখ্যাটা সঙ্গত নয়।
তিনি বলেন, আমরা জানি সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর, এক্ষেত্রে দুই বছরেও সংসদ ভেঙে দেয়া হতে পারে। পরপর দুইবারের বেশি একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হবেন না , তার মানে হচ্ছে তিনবার তিনি হবেন না, এটাও ঠিক। আবার পরপর দুই মেয়াদের পরে গ্যাপ দিয়ে যদি সেই একই পার্টি অথবা জোট ম্যান্ডেট পায় তবে তারা একই ব্যক্তিকে আবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করতে পারে। সেরকম ব্যাখ্যা আছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি প্রস্তাব করেছিলাম মেয়াদ এবং বার এই বিতর্কে না থেকে, সর্বোচ্চ এক ব্যক্তি লাইফ টাইমে কত বছর জন্য প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন বা হতে পারবেন? সেটা তিনবারে হোক, তিন মেয়াদে হোক, চার বার হোক। সর্বোচ্চ বছরটা যদি আমরা এখানে উল্লেখ করতে পারি একজন লোক লাইফ টাইমে এত বছরে বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না। এটা স্পেসিক কোন বছরের আমরা আমি উল্লেখ করিনি। সেটা ডিসাইড করার ক্ষমতা এককভাবে আমার দলের পক্ষ থেকে আমার নেই । যদি হাউস ডিসাইড করে একটা মেয়াদ মনে করেন ১০ বছরের জন্য ডিসাইড করলো , এক ব্যক্তি তার জীবন দশায় সর্বোচ্চ ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন না। তখন আমি বলেছি, এ ধরনের একটা আলোচনা ওখানে এসেছে, ঠিক এটা আমার প্রস্তাব নয়, তবে হাউসে যদি এটি ডিসাইড হয়।
এটি আমার দলীয় ফোরামে আলোচনা করতে হবে। কিন্তু এর সঙ্গে আমি কয়েকটা বিষয় বলেছি যদি আপনারা এখানে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণ করতে আসেন তবে তার সঙ্গে এনসিসির আলাপটাও একই সঙ্গে আনতে হবে। ন্যাশনাল কনস্টিশন কাউন্সিলের প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার ভুক্ত সমস্ত জিনিস যদি অথরিটি একটা পাওয়ার ফাংশন দিয়ে এনসিসি গঠন করা হয়, তার সঙ্গে আমরা একমত হতে পারব না। এজন্য একইসঙ্গে এনসিসি, আপার হাউজ নিয়ে আলোচনার দরকার আছে।
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, এজন্য প্যাকেজ আলোচনার দরকার আছে। দলীয় ফোরামে আলোচনা করার জন্য দুইদিন সময় দেওয়া হয়েছে ।
রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির প্রসঙ্গে সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, এখন মূলনীতি কিভাবে ডিসাইড করবে। অনেকেই পঞ্চদশ সংশোনীর কথা বলা হয়েছে। হাইকোর্ট রায় অনুসারে পরবর্তী পার্লামেন্টে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যদি আমরা ম্যান্ডেটপ্রাত হয় তাহলে আমরা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র যুক্ত করব।
তিনি বলেন, আমরা পঞ্চদশ সংশোধোনীর পূর্বের অবস্থায় যেতে চাই অর্থাৎ পঞ্চম সংশোধনীতে ফিরতে চাই। যেখানে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম আছে এবং আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস আছে, এর সঙ্গে রাষ্ট্র মূলনীতি সাম্য মানবিক মর্যাদা, এবং গণতন্ত্র যোগ করব। আমরা পঞ্চদশ সংশোধনী মানি না।
ঐকমত্য হওয়া নিয়ে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা এখনও হতাশ হতে চাই না। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রচণ্ড চেষ্টা করছে। আমাদের আহ্বান থাকবে যেন আমরা ন্যূনতম বিষয়ে ঐকমত্য হতে পারি।