দীর্ঘদিন ধরে বদলির আদেশ অমান্য করে খুলনা জেলা পরিষদে বহাল থাকা প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম মাহাবুবুর রহমানকে অবশেষে স্ট্যান্ড রিলিজ করে বদলির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি নেত্রকোনা জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেওয়ার আদেশ পেলেও, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের জেলা পরিষদ শাখা থেকে জারি করা আদেশে বলা হয়, মাহাবুবুর রহমানকে ১৩ আগস্টের মধ্যে দায়িত্বভার গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় ১৪ আগস্ট থেকে তার বর্তমান দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি বলে গণ্য হবে।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর তাকে বগুড়া জেলা পরিষদে বদলি করা হলেও তিনি যোগ দেননি। পরে ২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর তাকে চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদে বদলি করা হয়, তবুও হাইকোর্টের আদেশ দেখিয়ে খুলনায় বহাল থাকেন।
জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় মাহাবুবুর রহমান খুলনা জেলা পরিষদে “অঘোষিত চেয়ারম্যান” হয়ে ওঠেন। দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হয়েও প্রথম শ্রেণির সুবিধা গ্রহণ, কোটি কোটি টাকার অনিয়ম-দুর্নীতি, ভুতুড়ে প্রকল্প, খেয়াঘাট ইজারায় অনিয়ম, এবং পরিষদের জায়গা দখল করে ব্যবসা এসবের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এছাড়া জেলা পরিষদের বহুতল আবাসিক ভবন ব্যক্তিগত দখলে রাখা, মোটরসাইকেলের নামে তেল তুলে ব্যক্তিগত গাড়ির খরচ চালানো, এবং নিজের প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে দুর্নীতি আড়াল করার অভিযোগও রয়েছে।
৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর কিছুদিন নীরব থাকলেও পরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পুনরায় সক্রিয় হন বলে অভিযোগ রয়েছে। ভুক্তভোগীরা দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এসএম মাহাবুবুর রহমান। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা জানান, মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী বুধবার তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।