ঢাকা ১১:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ:
মাগুরায় একই গ্রামের তিনজনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অনন্য সাফল্যের কৃতিত্ব। শিক্ষায় ভাষা কোনো প্রতিবন্ধকতা নয়,তার প্রমাণ নেপালের মেয়ে স্তুতি রিমাল। এনসিপি নেত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার! মাগুরায় আওয়ামিলীগ নেতা মুহিতের ম্যানেজার মিরাজ  হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার। অমর একুশে বইমেলা শুরু ২০ ফেব্রুয়ারি। মৃত মানুষকে জীবিত দেখিয়ে রোমহর্ষক জমি জালিয়াতি। আওয়ামীলীগ নেতা, দলিল লেখক ও সাব- রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে আদালতে। মহান বিজয় দিবসে রাজৈর উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি ভাস্কর্যে রাজৈরে কমর্রত সাংবাদিকদের ফুলেল শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ। অধ্যক্ষ সৈয়দ রবিউল আলমের অতীত স্মৃতির “বিজয় ৭১” কদমবাড়ীর মেধাবী কন্যা শৈলী মনি দত্ত একজন মানবিক চিকিৎসক হতে চায়। *জেল হাজতে যমুনা অয়েলের ‘তেল মাফিয়া’ এয়াকুব : নেপথ্যের ক্ষমতার অবসান, ভাঙছে ১৭ বছরের দুর্নীতির সাম্রাজ্য**

৪ ডিসেম্বর রাজৈর মুক্ত দিবস। নতুন প্রজন্মের অজানা ইতিহাস।

  • সারাক্ষণ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৪২:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ১১২ জন সংবাদটি পড়েছেন

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে পাক হানাদার বাহিনী যে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের অস্তিত্বকে মুছে ফেলার যে ষড়যন্ত্র করেছিল তারই ধারাবাহিকতায় বাংলার আপামর জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশকে স্বাধীন করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ছিল এদেশের শুধু মাটি চাই মানুষ নয়। বাঙালিরাও মাতৃভূমিকে স্বাধীন করতে বদ্ধপরিকর। শুরু হলো সর্বাত্মক মুক্তিযুদ্ধ।

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় এপ্রিল মাসের শেষের দিকেই পাক হানাদার বাহিনী আস্তানা গড়ে তোলে। তবে আগস্ট মাসের প্রথম দিক থেকে মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমণ শুরু করে। একাত্তরের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় পর্যুদস্ত পাক হানদার বাহিনী মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা থেকে পালিয়ে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ছাগলছিড়া এলাকায় চলে যায় এবং সেখান থেকে বন্দি হয় ১৩৫ জন পাক হানাদার। মুক্ত হয় রাজৈর উপজেলা।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কমলাপুর, পাখুল্যা, লাউসার, কদমবাড়ি ,মহিষমারী, ইশিবপুর ও কবিরাজপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে। পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয় রাজৈর বড় ব্রিজ, আমগ্রাম ব্রিজ ও টেকেরহাটে। এর মধ্যে পাখুল্যায় মুখোমুখি যুদ্ধ হয়। এখানে অংশ নেন সাবেক রক্ষীবাহিনীর ডেপুটি ডিরেক্টর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) সরোয়ার হোসেন মোল্লা। সকাল ৭:০০টা থেকে বিকেল ৩:৩০টা পর্যন্ত চলে যুদ্ধ। ১৯৭১ সালে ঈদের আগের রাতে বৌলগ্রামে পাকবাহিনীকে অবরুদ্ধ করে রাখে মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে সর্বশেষ ৩ ডিসেম্বর মধ্য রাতে পাকবাহিনী রাজৈর ছেড়ে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে মুক্তিযোদ্ধারা টেকেরহাট বন্দরে তাদের আক্রমণ করেন। পাকবাহিনী পালিয়ে গোপালগঞ্জের ছাগলছিড়া নামক স্থানে পৌঁছালে স্থানীয় গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পাকবাহিনীর ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। গ্রামবাসীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা ১৩৫ জন পাক হানাদারকে বন্দি করেন। ৪ ডিসেম্বর ভোরের আলো নিয়ে আসে এই উপজেলাবাসীর মুক্ত হওয়ার বার্তা।মুক্ত হয় রাজৈর উপজেলাবাসী। রাজৈরবাসীর উচিত এ দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা। এবং নতুন প্রজন্মের কাছে অত্র অঞ্চলের বীর সন্তানদের বীরত্ব গাঁথা তুলে ধরতে লেখক ও সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখা বাঞ্ছনীয়।

 

 

Tag :
About Author Information

GOURANGA BOSE

জনপ্রিয় সংবাদ

মাগুরায় একই গ্রামের তিনজনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অনন্য সাফল্যের কৃতিত্ব।

৪ ডিসেম্বর রাজৈর মুক্ত দিবস। নতুন প্রজন্মের অজানা ইতিহাস।

আপডেট সময় : ১২:৪২:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে পাক হানাদার বাহিনী যে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের অস্তিত্বকে মুছে ফেলার যে ষড়যন্ত্র করেছিল তারই ধারাবাহিকতায় বাংলার আপামর জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দেশকে স্বাধীন করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ছিল এদেশের শুধু মাটি চাই মানুষ নয়। বাঙালিরাও মাতৃভূমিকে স্বাধীন করতে বদ্ধপরিকর। শুরু হলো সর্বাত্মক মুক্তিযুদ্ধ।

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় এপ্রিল মাসের শেষের দিকেই পাক হানাদার বাহিনী আস্তানা গড়ে তোলে। তবে আগস্ট মাসের প্রথম দিক থেকে মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমণ শুরু করে। একাত্তরের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় পর্যুদস্ত পাক হানদার বাহিনী মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা থেকে পালিয়ে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ছাগলছিড়া এলাকায় চলে যায় এবং সেখান থেকে বন্দি হয় ১৩৫ জন পাক হানাদার। মুক্ত হয় রাজৈর উপজেলা।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কমলাপুর, পাখুল্যা, লাউসার, কদমবাড়ি ,মহিষমারী, ইশিবপুর ও কবিরাজপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে। পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয় রাজৈর বড় ব্রিজ, আমগ্রাম ব্রিজ ও টেকেরহাটে। এর মধ্যে পাখুল্যায় মুখোমুখি যুদ্ধ হয়। এখানে অংশ নেন সাবেক রক্ষীবাহিনীর ডেপুটি ডিরেক্টর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) সরোয়ার হোসেন মোল্লা। সকাল ৭:০০টা থেকে বিকেল ৩:৩০টা পর্যন্ত চলে যুদ্ধ। ১৯৭১ সালে ঈদের আগের রাতে বৌলগ্রামে পাকবাহিনীকে অবরুদ্ধ করে রাখে মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধাদের মরণপণ লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে সর্বশেষ ৩ ডিসেম্বর মধ্য রাতে পাকবাহিনী রাজৈর ছেড়ে ফরিদপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে মুক্তিযোদ্ধারা টেকেরহাট বন্দরে তাদের আক্রমণ করেন। পাকবাহিনী পালিয়ে গোপালগঞ্জের ছাগলছিড়া নামক স্থানে পৌঁছালে স্থানীয় গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পাকবাহিনীর ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। গ্রামবাসীর সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা ১৩৫ জন পাক হানাদারকে বন্দি করেন। ৪ ডিসেম্বর ভোরের আলো নিয়ে আসে এই উপজেলাবাসীর মুক্ত হওয়ার বার্তা।মুক্ত হয় রাজৈর উপজেলাবাসী। রাজৈরবাসীর উচিত এ দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা। এবং নতুন প্রজন্মের কাছে অত্র অঞ্চলের বীর সন্তানদের বীরত্ব গাঁথা তুলে ধরতে লেখক ও সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখা বাঞ্ছনীয়।