সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় তিনজন পুলিশ সদস্যসহ চারজনের বিরুদ্ধে এক কলেজছাত্রকে নির্যাতন করে শ্রবণশক্তি নষ্ট করা এবং ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী মো. জাহিদুল ইসলাম (১৯) নিজে বাদী হয়ে উল্লাপাড়া আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন। তিনি উপজেলার কানসোনা গ্রামের বাসিন্দা এবং সাম্প্রতিক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী।
মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, প্রধান আসামি মো. রুবেলের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে জাহিদুলের পরিচয় হয়। গত ১০ আগস্ট গভীর রাতে রুবেল ফোন করে তাকে বাড়ির বাইরে ডেকে নেয়। সেখানে গেলে রুবেলের সঙ্গে উল্লাপাড়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আ. হালিম এবং সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুস সাত্তারকে দেখতে পান।
তারা মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের নামে জাহিদুলকে মারধর শুরু করে এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে এসআই হালিম সজোরে থাপ্পড় মারেন, এতে তার ডান কানের পর্দা ফেটে যায় এবং তিনি শ্রবণশক্তি হারান। অন্য আসামিরা বুট দিয়ে গলা চেপে ধরে এবং লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে।
আরজিতে আরও বলা হয়, ঘটনার দুই দিন পর এএসআই আব্দুস সাত্তার জাহিদুলের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেন এবং এক সাক্ষীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে আসেন। এরপরও আসামিরা বাকি টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে এবং মামলা দিয়ে চাকরি ও জীবন নষ্ট করার ভয় দেখায়।
ভুক্তভোগী আদালতের কাছে আবেদন করেছেন, তার দাখিল করা পিটিশন সরাসরি এফআইআর হিসেবে গণ্য করার জন্য উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হোক।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড গুরুতর উদ্বেগজনক এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় না আনা হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে পুলিশের প্রতি আস্থা আরও কমে যাবে এবং সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।