ঝিনাইদহে জামিন নিতে আদালতে এসে থেকে পালিয়েছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। তার নাম নজরুল ইসলাম খান। তিনি জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার। দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এই আওয়ামী লীগ নেতাকে জামিন করতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন তার আইনজীবি শারমিন সুলতানা শ্যামলী।
নজরুল ইসলাম খান কালীগঞ্জ উপজেলার নাটোপাড়া গ্রামের হাসেম আলী খানের পুত্র। আদালত সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি নাটোপাড়া গ্রামে শাহিনুর রহমান শাহীনের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি। ওই মামলায় ২৫ জন আসামির সবাই রোববার ঝিনাইদহ আদালতে জামিন নিতে যান। আসামিদের পক্ষে আইনজীবি শারমিন সুলতানা শ্যামলী ওকালতনামায় স্বাক্ষর নিয়ে আদালতে জামিন আবেদন করেন। তবে জামিন শুনানিতে ২৪ জন আসামি সশরীরে উপস্থিত থাকলেও আদালতে হাজির হননি ওই মামলার এক নম্বর আসামি নজরুল ইসলাম খান।
ওকালতনামায় স্বাক্ষর করে কৌশলে আদালত থেকে পালিয়ে যান তিনি। ওই আসামিকে হাজিরের জন্য এক ঘণ্টা সময় দেন আদালত। পরে আইনজীবি শারমিন সুলতানা শ্যামলী আসামিকে আদালতে হাজিরে ব্যর্থ হন। মামলার ২৫ জন আসামির মধ্যে পার্শ্ববর্তী ছোট তালিয়ান গ্রামের পাঁচ আসামি জামিন পান। নাটোপাড়া গ্রামের ১৯ জন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
ঝিনাইদহ আদালতের একাধিক আইনজীবি জানান, শারমিন সুলতানা শ্যামলী আওয়ামীপন্থী একজন আইনজীবি। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মামলা থেকে জামিন করতে নানান প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন তিনি। আসামিকে সশরীরে আদালতে হাজির না করে প্রতারণা করে জামিন নেওয়ার চেষ্টা দুঃখজনক। এই আইজীবির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আসামিপক্ষের আইনজীবি শারমিন সুলতানা শ্যামলীর বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।
বাদীপক্ষের আইনজীবি খলিল মিয়া জানান, এই মামলায় ২৫ জন আসামিকে আত্মসমর্পণ দেখিয়ে আদালতে জামিন চাওয়া হয়। পরবর্তীতে আসামিদের আইনজীবির মিথ্যা আদালতে ধরা পড়ে। আসামিদের মধ্যে ২৪ জন উপস্থিত ছিলেন। এক নম্বর আসামি নজরুল ইসলাম খান আদালতে হাজির ছিলেন না। মূলত এই আসামিকে আদালতে হাজির না করেই কৌশলে জামিন করতে চেয়েছিলেন তার আইনজীবি।
ঝিনাইদহ জেলা আদালতের কোর্ট পরিদর্শক মো. মুক্তার হোসেন বলেন, এই মামলায় ১৯ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।